বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আপনারা লক্ষ্য করে দেখবেন যে, বিভিন্ন রকম নেগেটিভ কথাবার্তার কারণে ফ্যাসিবাদ কিন্তু মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে শুরু করেছে। বিভিন্ন জায়গায় এবং দুর্ভাগ্যজনকভাবে আমাদের কিছু কিছু মিডিয়া তাকে প্রোমোট করছে- যেটা আমি মনে করি, কখনই জনগণের জন্য শুভ বয়ে আনবে না।
শনিবার (৯ নভেম্বর) দুপুরে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির মিলনায়তনে বাংলাদেশ ইয়ুথ পার্লামেন্ট অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
জুলাই-অগাস্টে ছাত্র-জনতার বিপ্লবে নিহত হাফেজ মোহাম্মদ ইমরান এবং আহত হাফেজ তোফায়েল আহমেদের পরিবারকে নাজমুল হক ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে অর্থ সহযোগিতা এবং যুব সংগঠনগুলোকে ক্রেস্ট প্রদান করা হয়।
মির্জা ফখরুল বলেন, আমি অনুরোধ করব, যারা এই ধরনের প্রচারণা চালাচ্ছেন- তারা দয়া করে এটাকে বন্ধ করেন। আমি এটাও অনুরোধ করব তরুণ-যুবকদের, যে আপনারা এতোবড় একটা অসাধ্য সাধন করেছেন; এই প্রবণতা যেন বন্ধ হয়- তার জন্য আপনারা কাজ নেবেন।
তিনি আরও বলেন, আমাদের সামনে যে সংকট আছে, সেই সংকট উত্তরণের একমাত্র পথ ধৈর্য ধরে আমাদের যে কাজগুলো- সেই কাজ সংস্কার এবং নির্বাচন, এগুলো যাতে সুষ্ঠুভাবে সম্পাদন করতে পারি- সেই কাজগুলো আমাদের করতে হবে।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, এই সরকারকে সময় দিতে হবে। তাদেরকে আমরা দায়িত্ব দিয়েছি, তারা কাজ করছেন। অনেকে বলেন যে-আমি অবাক হই যে, মিডিয়ার মধ্যে অনেকেই কোনো সাফল্য দেখতে পান না। এই তিন মাস সময়ের মধ্যে এরা অনেক কাজ করেছে। অস্বীকার করা তো উপায় নেই। সংস্কার করার জন্য তারা কমিশন গঠন করেছে, আইন পরিবর্তন করেছে, আইনগুলো নিয়ে কাজ করছে। বেশ কিছু ফ্যাসিবাদের দোসর- তাদেরকে আটক করেছে; বিচারের জন্য ব্যবস্থা নিচ্ছে। এই বিষয়গুলো কিছু করছে। সব কিছু একসাথে সম্ভব নয়।
তিনি আরও বলেন, আমি বিশেষ করে তরুণদের বলব, ওই অনুরোধটুকু করব যে- আপনাদের একটু ধৈর্য ধরতে হবে। আমরা বিশ্বাস করি যে, যাদের নেতৃত্বে এই সরকার চলছে তাদের নেতৃত্বে একটা-যেখানে ছাত্ররাও এর মধ্যে আছে, তরুণরাও এর মধ্যে আছে; আমি বিশ্বাস করি, তারা নিশ্চয়ই সেই জায়গাটাতে পৌঁছাতে পারবেন। ‘একটা কথা আমাদেরকে জরুরিভাবে মনে রাখতে হবে যে, এবার যে সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে- সেই সুযোগ যাতে কোনো মতেই হাতছাড়া না করি। এবার এই সুযোগ হারিয়ে গেলে আমাদের জাতি হিসেবে অস্তিত্ব বিপন্ন হয়ে পড়বে; আমি এই কথাটা জোর দিয়ে বলতে চাই।
মির্জা ফখরুল বলেন, আওয়ামী লীগ যে জঞ্জাল সৃষ্টি করে গেছে, সেই জঞ্জালগুলোকে সরিয়ে একটা সুষ্ঠু অবাধ নির্বাচনের ব্যবস্থা করবেন অন্তবর্তীকালীন সরকার, যাতে করে নির্বাচনের মধ্য দিয়ে আমরা এই যুবকদের চাওয়া, তরুণদের চাওয়া যে নতুন বাংলাদেশ- সেটা তৈরি করতে পারি। আমরা নির্বাচনের কথা বারবার বলছি। অনেকে প্রশ্ন করেছেন, আপনি এতো নির্বাচনের কথা বলেন কেন? কারণ আমি মৌলিকভাবে গণতন্ত্র বিশ্বাসী একজন মানুষ। আমি বিশ্বাস করি যে, জনগণের অংশগ্রহণ ছাড়া কোনো সংস্কার কখনোই সফল হতে পারে না। জনগণের অ্যাকটিভ পার্টিসিপেশন সম্ভব একটা নির্বাচিত পার্লামেন্টের মাধ্যমে। ওটা যদি কার্যকর করা যায়- তাহলে পুরো বিষয়গুলো গণতান্ত্রিক চর্চার মধ্যে নিয়ে আসা সম্ভব হয়।