ডলারের দাম এক লাফে ৭ টাকা বাড়িয়ে ১১৭ টাকা নির্ধারণ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। পাশাপাশি ঋণের ক্ষেত্রে স্মার্ট সুদহার নির্ধারণ পদ্ধতি বাতিল করে তা বাজারভিত্তিক করা হয়েছে।
এভাবে ডলারের দাম বাড়ায় জীবনযাত্রার ব্যয় বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। ব্যবসায়ীরা জানান, অনেক পণ্য আমদানি নির্ভর হওয়ায় তা বাজারে সরাসরি প্রভাব ফেলবে। ফলে মূল্যস্ফীতি আরও বাড়ার আশঙ্কা অর্থনীতিবিদদের। এছাড়া, টাকার অবমূল্যায়ন বাড়তে পারে ৪২ শতাংশ পর্যন্ত।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, চাল, ডালসহ অনেক ভোগ্যপণ্য আমদানিনির্ভর হওয়ায় বাজারে বাড়বে সংকট। এতদিন যে পণ্য আমদানিতে ১০০ টাকা লাগতো, এখন ডলারের দাম বাড়ায় সেখানে বাড়তি দিতে হবে ৭ টাকা ৭০ পয়সা। ডলারের বিপরীতে টাকার অবমূল্যায়ন ছাড়াতে পারে ৪০ থেকে ৪২ শতাংশ পর্যন্ত।
এক্সক্লুসিভ ক্যান লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ নাসির বলেন, ‘আমরা যদি ৮৫ শতাংশকে একটা স্থিরমূল্য ধরি, পূর্ববর্তী মূল্য ধরি। আর আমাদের মাঝখানের যে রেটটা উঠে গিয়েছিল ১২০ বা ১২১। আমরা সেই হিসেবে দেখতাম যে অবমূল্যায়ন হয়েছে ৪০ শতাংশের কাছাকাছি। এখন মনে হচ্ছে দাম ১২২ কিংবা সর্বোচ্চ ১২৫ হতে পারে। তো সেক্ষেত্রে এটা ৪১ কিংবা ৪২ শতাংশ হয়ে যেতে পারে।’
হঠাৎ ডলারের দাম বাড়ায় বিদ্যুৎ ও জ্বালানি তেলের মূল্য আরেক দফা বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা অর্থনীতিবিদদের। অর্থনীতিবিদ আহসান এইচ মনসুর বলেন, ‘শর্ট টার্মে একটা শক আসবে। আমরা ধাক্কা খাবো। ধাক্কাটা হচ্ছে, আমাদের এখন বেশি টাকা দিতে হবে। আমি মনে করি যে এই প্রেক্ষাপটে এটা প্রয়োজন ছিল।’
তবে, নতুন সিদ্ধান্তের ফলে রপ্তানি আয়ের পাশাপাশি বৈধ পথে প্রবাসী আয়ও বাড়তে পারে বলে মনে করছেন অর্থনীতিবিদরা। এ নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক শাহাদাত হোসেন সিদ্দিকী বলেন, ‘একক এক্সচেঞ্জ রেট যদি প্রতিষ্ঠা করা হয়, তাহলে ইনফরমাল চ্যানেলে যে রেমিট্যান্স আসে সেটা কিন্তু ফরমাল চ্যানেলে আনা যায়। সেক্ষেত্রে কিন্তু বাংলাদেশের এই মার্কেটটাকে কাজে লাগিয়ে আগের অবস্থায় আসা যাবে বলে আমি মনে করি।’ এদিকে, খোলা বাজারে দেখা গেছে প্রতি ডলার ১২২ থেকে ১২৫ টাকায় বিনিময় হচ্ছে ডলার।